আলু চাষ

আলু চাষ : জনপ্রিয় জাত, রোগবালাই ও প্রতিকার

আলু আলু, বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় এবং গুরুত্বপূর্ণ শাকসবজি। এটি খাদ্য তালিকায় একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে, বিশেষ করে তার মিষ্টি স্বাদ এবং বহুমুখী ব্যবহার কারণে। আলু বিভিন্ন প্রকারের রন্ধনপ্রণালীতে ব্যবহার করা হয়, যা এটিকে আমাদের খাদ্য তালিকায় অপরিহার্য করে তোলে। এই নিবন্ধে আমরা আলুর ইতিহাস, চাষের পদ্ধতি, পুষ্টিগুণ এবং বিভিন্ন রান্নার ব্যবহার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। আলুর ইতিহাস ও উৎপত্তি আলুর উৎপত্তি দক্ষিণ আমেরিকার আন্দিজ পর্বতের অঞ্চলে। প্রাচীন ইনকার সভ্যতা আলু চাষ শুরু করে। এরপর ইউরোপে আসার পরে এটি দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। আলু উচ্চ উৎপাদনশীল ফসল, যা বিভিন্ন ধরনের মাটিতে চাষ করা যায় এবং এতে ভিটামিন, খনিজ, এবং ফাইবারের উচ্চ মাত্রা থাকে। বাংলাদেশে জনপ্রিয় জাত সমূহ : ডায়মন্ড, কার্ডিনাল, গ্রানুলা ইত্যাদি। দেশী জাত গুলোর মধ্যে শীলবিলাতী, কুফরী সুন্দরী উল্লেখযোগ্য। আলু চাষের পদ্ধতি আলু চাষের জন্য কিছু প্রাথমিক পদক্ষেপ রয়েছে যা অনুসরণ করা উচিত। নিচে এই পদক্ষেপগুলো আলোচনা করা হলো: 1. মাটি নির্বাচন ও প্রস্তুতি আলুর জন্য সঠিক মাটি নির্বাচন করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আদর্শভাবে, আলুর জন্য দোআঁশ মাটি উপযুক্ত। মাটি প্রস্তুত করার সময়, এটি ভালভাবে চাষ করা উচিত এবং দরকার হলে কাঁচা সার মিশিয়ে নেওয়া উচিত। মাটির পিএইচ ৪.৮ থেকে ৫.৮ এর মধ্যে থাকা উচিত। 2. আলুর কন্দ নির্বাচন আলু চাষের জন্য স্বাস্থ্যকর এবং রোগমুক্ত কন্দ নির্বাচন করা খুব জরুরি। সাধারণত, ছোট ও মসৃণ কন্দগুলো চাষের জন্য ভালো। একটি কন্দে ২-৩টি চোখ থাকতে হবে, যা নতুন গাছের উৎপত্তি করতে সহায়ক। 3. বপনের সময় আলু বপনের সময় সাধারণত শীতের শেষে বা বসন্তের শুরুতে হয়। স্থানীয় আবহাওয়ার উপর নির্ভর করে এই সময়সীমা পরিবর্তিত হতে পারে। সাধারণত, আলুর কন্দগুলি ১০-১২ ইঞ্চি দূরত্বে এবং ৩-৪ ইঞ্চি গভীরে পোঁতা হয়। 4. জল দেওয়া ও সার দেওয়া আলু গাছকে পর্যাপ্ত জল দেওয়া প্রয়োজন, তবে জল জমতে দেওয়া উচিত নয়। মাটির আর্দ্রতা বজায় রাখতে হবে। সার হিসেবে, পটাশিয়াম ও ফসফরাস সমৃদ্ধ সার ব্যবহার করা উচিত, যা আলুর উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করবে। 5. রোগ ও পোকামাকড়ের দমন আলু গাছের বিভিন্ন রোগ এবং পোকামাকড়ের কারণে সমস্যা দেখা দিতে পারে। সাধারণ রোগের মধ্যে রয়েছে ব্লাইট, স্ক্যাব এবং ফিউজারিয়াম। পোকামাকড়ের মধ্যে সাইটিং, এফিড এবং টমেটো হর্নওয়ার্ম উল্লেখযোগ্য। এদের নিয়ন্ত্রণের জন্য জৈব বা রসায়নিক পদ্ধতি ব্যবহার করা উচিত। 6. আলু তোলা আলু সাধারণত ৮-১০ সপ্তাহ পর তোলার জন্য প্রস্তুত হয়। আলুর গাছের পাতা শুকিয়ে গেলে এবং সাদা হয়ে গেলে এটি সঙ্কেত দেয় যে আলু তোলার সময় এসেছে। আলু তোলার সময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে যেন কন্দগুলো ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।   উপসংহার : আলু একটি গুরুত্বপূর্ণ শাকসবজি, যা খাদ্য তালিকায় স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর বিকল্প হিসেবে পরিচিত। এর চাষ সহজ, এবং এটি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে চাষ করা হয়। আলুর পুষ্টিগুণ এবং রান্নার বহুমুখিতা এটিকে সব মানুষের প্রিয় খাদ্য করে তুলেছে। সঠিকভাবে আলু চাষ, সংরক্ষণ, এবং রান্নার মাধ্যমে, আমরা এর উপকারিতা উপভোগ করতে পারি এবং আমাদের খাদ্য তালিকায় এটি অন্তর্ভুক্ত করতে পারি। আলু চাষের ক্ষেত্রে সব তথ্য এবং পদক্ষেপগুলি জানা থাকলে, এটি আপনার কৃষির ক্ষেত্রে একটি সফল এবং ফলপ্রসূ ফসল হতে পারে। তাই আজই আলু চাষের পরিকল্পনা করুন  

Read More
ডোনাল্ড ট্রাম্প

ডোনাল্ড ট্রাম্প: জীবনী ও বিতর্ক

ডোনাল্ড ট্রাম্প: ডোনাল্ড জে. ট্রাম্প ১৯৪৬ সালের ১৪ জুন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের কুইন্সে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট এবং ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি তিনি শপথ নেন। প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে থেকেই ট্রাম্প মার্কিন সমাজে একজন বিশিষ্ট ধনকুবের হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তাঁর বেশিরভাগ জীবন কেটেছে ব্যবসা ও বিনোদন জগতের সাথে যুক্ত থেকে। রাজনীতিতে তাঁর সরাসরি সম্পৃক্ততা খুব একটা দেখা যায়নি। অতীতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কথা বললেও তিনি নির্বাচনে অংশ নেননি। তবে ২০১৫ সালের ১৫ জুন তিনি আচমকাই নিজের প্রেসিডেন্ট প্রার্থিতা ঘোষণা করেন, যা অনেকেই ততটা গুরুত্ব দেননি এবং তাঁকে নিয়ে হাস্যরস করা হয়। কিন্তু ট্রাম্প নিজের লক্ষ্যে স্থির থেকে, একজন সফল ব্যবসায়ী থেকে রাজনীতিবিদের রূপান্তর ঘটান। ২০১৬ সালের নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে পরাজিত করে তিনি হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করেন। ট্রাম্পের বাবা ফ্রেড ট্রাম্প ছিলেন নিউইয়র্কের একজন বিশিষ্ট আবাসন ব্যবসায়ী এবং তাঁর মা মেরি ট্রাম্প ছিলেন স্কটিশ বংশোদ্ভূত। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে তিনি চতুর্থ। ছোটবেলা থেকে দুরন্ত স্বভাবের কারণে তাঁকে নিউইয়র্ক মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে পড়ানো হয়। ১৯৬৮ সালে তিনি পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়ারটন স্কুল থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন এবং বাবার ব্যবসায় যোগ দেন। বাবার প্রতিষ্ঠানে তিনি ছোট পদ থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে ব্যবসার পরিধি বাড়াতে থাকেন, বিশেষ করে হোটেল, ক্যাসিনো এবং গলফ কোর্সের ব্যবসায়। ট্রাম্প দীর্ঘদিন মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতার স্পনসর ছিলেন এবং “দ্য অ্যাপ্রেন্টিস” নামের টিভি রিয়্যালিটি শো উপস্থাপনা করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। এছাড়া তিনি বিভিন্ন রেসলিং ইভেন্টেও অংশ নেন। তাঁর ব্যবসায়িক জীবনে বেশ কয়েকবার দেউলিয়া ঘোষণা করার পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন আইনি ঝামেলায়ও জড়িয়ে পড়েন। ব্যক্তিগত জীবনে, ট্রাম্প তিনবার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন এবং তাঁর পাঁচ সন্তান রয়েছে। তাঁর প্রথম স্ত্রী ছিলেন চেক মডেল ইভানা, যাঁর সঙ্গে ১৯৯২ সালে বিচ্ছেদ হয়। দ্বিতীয় স্ত্রী মার্লা ম্যাপলসের সাথে ১৯৯৩ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং ১৯৯৯ সালে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়। ২০০৫ সালে তিনি তৃতীয়বার মেলানিয়া ট্রাম্পকে বিয়ে করেন, যিনি প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ফার্স্ট লেডি ছিলেন। ট্রাম্পের রাজনৈতিক জীবনের প্রারম্ভিক পর্যায়ে তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে যুক্ত ছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি রিপাবলিকান পার্টির হয়ে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হন এবং তাঁর প্রচারনার সময় বিভিন্ন বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন। তাঁর মুসলিম অভিবাসন নিষেধাজ্ঞা, জলবায়ু পরিবর্তন অস্বীকার, নারীদের প্রতি অবমাননাকর মন্তব্যসহ বিভিন্ন মন্তব্য তাঁকে তীব্র সমালোচনার মুখে ফেলেছিল। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে অশালীন আচরণ ও যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে, তবুও তিনি দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত করে হিলারি ক্লিনটনকে পরাজিত করেন। নির্বাচনে বিজয়ের পর রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগ ওঠে, যার তদন্ত এখনও চলছে। ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় তাঁর বিতর্কিত নির্বাহী আদেশ এবং প্রশাসনের অস্থিরতা নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে। ট্রাম্পের বৈদেশিক নীতি যেমন গোলমেলে, তেমনি তাঁর অভ্যন্তরীণ নীতিরও নানান সংকট দেখা দিয়েছে। তবু তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। ট্রাম্প সবসময় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতে পছন্দ করেন এবং প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরও তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশেষত টুইটারে নানা বিতর্কিত মন্তব্য করে শিরোনাম হয়েছেন।

Read More
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

আমেরিকার নির্বাচন

 আমেরিকার নির্বাচন আমেরিকার নির্বাচন বিশ্ব রাজনীতির অন্যতম আলোচিত ইভেন্ট। এর প্রভাব শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রে সীমাবদ্ধ নয়; এটি বৈশ্বিক রাজনীতি ও অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। প্রতি চার বছর অন্তর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আমেরিকার নির্বাচন প্রক্রিয়া, নির্বাচনী কলেজের ভূমিকা, কমলা হ্যারিসের মতো ব্যক্তিত্বের উত্থান, এবং এই প্রক্রিয়ার বিশ্বজুড়ে গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনায় নিম্নলিখিত বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে।  আমেরিকার নির্বাচনী প্রক্রিয়া আমেরিকার নির্বাচন দ্বিদলীয় ব্যবস্থার ভিত্তিতে পরিচালিত হয়, যেখানে প্রধান দুটি দল হলো ডেমোক্র্যাটিক এবং রিপাবলিকান পার্টি। নির্বাচনী প্রক্রিয়ার বিভিন্ন ধাপ রয়েছে: 1. প্রাইমারি নির্বাচন (Primary Election): এখানে প্রতিটি দল থেকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী নির্বাচিত হয়। প্রাথমিক নির্বাচনের মাধ্যমে একটি দল তার পছন্দের প্রার্থীকে নির্ধারণ করে, যারা সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। 2. কনভেনশন (Convention): প্রতিটি দল তার দলের কনভেনশনে তাদের মনোনীত প্রার্থীকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে। এখানে দলের প্ল্যাটফর্ম বা মতাদর্শও নির্ধারিত হয়। 3. সাধারণ নির্বাচন (General Election): সাধারণ নির্বাচনে জনগণ সরাসরি ভোট দেয়। তবে আমেরিকার নির্বাচন ব্যবস্থা সরাসরি গণভোটের ওপর নির্ভরশীল নয়। নির্বাচনী কলেজ নামে পরিচিত একটি ব্যবস্থা অনুযায়ী প্রতিটি রাজ্য তাদের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে ভোট প্রদান করে। 4. নির্বাচনী কলেজ (Electoral College): আমেরিকার নির্বাচনী কলেজ পদ্ধতি অনুযায়ী, প্রতিটি রাজ্য নির্দিষ্টসংখ্যক ইলেক্টোরাল ভোট পায়, যা তাদের জনসংখ্যার ওপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয়। মোট ৫৩৮টি ইলেক্টোরাল ভোটের মধ্যে ২৭০ ভোট পাওয়া প্রার্থী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।  মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন প্রতি চার বছর অন্তর অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আমেরিকার রাজনৈতিক ব্যবস্থার অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য। বর্তমান প্রেসিডেন্ট পদে থাকা ব্যক্তি পুনরায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন, যদি তারা একবারই প্রেসিডেন্ট থাকেন। তবে প্রেসিডেন্টের মেয়াদ সীমাবদ্ধ থাকে দুটি মেয়াদে, যার মোট সময় আট বছর। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিন নভেম্বর মাসের প্রথম মঙ্গলবারে অনুষ্ঠিত হয়। প্রেসিডেন্ট নির্বাচন একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া, যেখানে প্রার্থীরা কয়েক মাস ধরে প্রচার চালায় এবং জনগণের মন জয় করার চেষ্টা করে।  ২০২০ সালের নির্বাচন এবং কমলা হ্যারিস ২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বিশ্ব রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। এই নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী জো বাইডেন রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজিত করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তবে এই নির্বাচনে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল কমলা হ্যারিসের উপ-প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন। তিনি মার্কিন ইতিহাসে প্রথম নারী, প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ এবং প্রথম এশিয়ান-আমেরিকান হিসেবে এই পদে আসীন হন। কমলা হ্যারিসের এই অর্জন যুক্তরাষ্ট্রে নতুন প্রজন্মের রাজনীতিবিদদের জন্য এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে এবং বৈশ্বিক রাজনীতিতে নারীদের ভূমিকা বাড়ানোর ক্ষেত্রে নতুন পথ উন্মোচন করেছে। আমেরিকার নির্বাচনের প্রভাব ও গুরুত্ব আমেরিকার নির্বাচন শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং বৈশ্বিক রাজনীতি ও অর্থনীতিতে এর ব্যাপক প্রভাব পড়ে। আমেরিকার রাজনৈতিক পরিবর্তন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, বাণিজ্য নীতি, জলবায়ু পরিবর্তন এবং অন্যান্য বৈশ্বিক ইস্যুগুলোতে প্রভাব ফেলতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি এবং প্রেসিডেন্ট বাইডেনের জলবায়ু পরিবর্তনের ওপর গুরুত্ব দেওয়া দুটি ভিন্ন ধরনের বৈশ্বিক প্রভাব তৈরি করেছে।  উপসংহার আমেরিকার নির্বাচন একটি জটিল এবং দীর্ঘ প্রক্রিয়া, যা গণতন্ত্রের অন্যতম সফল উদাহরণ। এই প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা, নির্বাচনী কলেজের প্রভাব এবং প্রার্থীদের ব্যক্তিত্ব সবকিছুই নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কমলা হ্যারিসের মতো ব্যক্তিত্বের উত্থান এবং বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে মার্কিন নির্বাচনের গুরুত্ব আমাদের এই প্রক্রিয়ার প্রভাবকে আরও স্পষ্টভাবে তুলে ধরে।

Read More
কমলা হ্যারিস: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী

কমলা হ্যারিস: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী

কমলা হ্যারিস কমলা হ্যারিস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির অন্যতম পরিচিত নাম। তার ব্যক্তিত্ব, নেতৃত্বগুণ এবং সমাজে ন্যায়বিচারের জন্য অবিচল অবস্থান তাকে মার্কিন জনগণের প্রিয় রাজনীতিবিদদের একজন করে তুলেছে। ২০২০ সালের নির্বাচনে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ও দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত নারী হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপরাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে তিনি ইতিহাস সৃষ্টি করেন। ২০২৪ সালে তিনি প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার জীবনী, রাজনৈতিক ক্যারিয়ার এবং নেতৃত্বের গুণাবলী বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা কমলা দেবী হ্যারিস ১৯৬৪ সালের ২০ অক্টোবর ক্যালিফোর্নিয়ার অকল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ডোনাল্ড জে. হ্যারিস একজন জ্যামাইকান বংশোদ্ভূত অর্থনীতির অধ্যাপক এবং তার মা শ্যামলা গোপালন একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত স্তন ক্যান্সার গবেষক। কমলার শৈশবের জীবন ছিল জাতিগত বৈচিত্র্য এবং বিভিন্ন সংস্কৃতির সংমিশ্রণে ভরপুর, যা তার ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক দর্শন এবং নেতৃত্বের গুণাবলীকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। ছোটবেলায় কমলার মা তাকে দায়িত্বশীলতা এবং নেতৃত্বের গুণাবলী শেখাতে খুবই সচেতন ছিলেন। তিনি কমলাকে প্রায়ই বলতেন, “তুমি যা পেয়েছো, তা শুধু নিজের জন্য নয়, বরং সমাজের জন্য।” এই কথাগুলি কমলার মননে গভীরভাবে প্রোথিত হয় এবং ভবিষ্যতে তার নেতৃত্বে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। কমলা হ্যারিস ওয়েস্টমন্ট হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন এবং পরবর্তীতে হাওয়ার্ড ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হন, যা যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বিখ্যাত আফ্রিকান-আমেরিকান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। হাওয়ার্ডে তার পড়াশোনার সময়, তিনি ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন এবং নেতৃত্বের গুণাবলী প্রদর্শন করেন। পরবর্তীতে তিনি ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হেস্টিংস কলেজ অফ দ্য ল থেকে আইনের ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ১৯৯০ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার বার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তার আইনজীবী হিসেবে পেশাগত জীবন শুরু হয় সান ফ্রান্সিসকো জেলা অ্যাটর্নির কার্যালয়ে, যেখানে তিনি সহকারী জেলা অ্যাটর্নি হিসেবে কাজ করেন। এখান থেকেই তার আইন এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রতি তার অবিচল অঙ্গীকার দৃঢ় হতে থাকে।  রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের শুরু কমলা হ্যারিসের রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয় ক্যালিফোর্নিয়ার সান ফ্রান্সিসকো থেকে। ২০০৩ সালে, তিনি সান ফ্রান্সিসকোর জেলা অ্যাটর্নি পদে নির্বাচিত হন এবং এই পদে তিনিই প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার সময়ে তিনি অপরাধ দমনে কঠোর নীতি গ্রহণ করেন এবং সেইসঙ্গে বিচার ব্যবস্থায় ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করেন। তিনি বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছিলেন মানব পাচার, যৌন নির্যাতন এবং মাদকাসক্তি মোকাবিলায়। তার কঠোর অবস্থানের জন্য অনেক সমালোচনার মুখেও তাকে পড়তে হয়েছিল, তবে তিনি তার অবস্থান থেকে বিচ্যুত হননি। তিনি সবসময় বিশ্বাস করেছেন যে, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা অপরিহার্য। ২০১০ সালে, কমলা হ্যারিস ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নির্বাচিত হন। এই পদে তিনিই প্রথম দক্ষিণ এশীয় এবং কৃষ্ণাঙ্গ নারী ছিলেন। অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে, তিনি বড় কর্পোরেশন এবং ব্যাংকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন, যা অর্থনৈতিক অস্থিরতার সময় সাধারণ জনগণের অধিকার সুরক্ষায় সহায়ক হয়েছিল। তার নেতৃত্বে, ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্য কয়েকটি বড় ব্যাংকের সাথে আলোচনা করে কয়েকশো কোটি ডলারের ক্ষতিপূরণ আদায় করেছিল, যা অর্থনৈতিক সংকটে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য সহায়ক প্রমাণিত হয়।  মার্কিন সিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন ২০১৬ সালে, কমলা হ্যারিস ক্যালিফোর্নিয়া থেকে মার্কিন সিনেটর হিসেবে নির্বাচিত হন। সিনেটে তার সময়ে, তিনি নাগরিক অধিকার, স্বাস্থ্যসেবা, অভিবাসন এবং পরিবেশ সুরক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোতে সরব ছিলেন। তার সিনেটর হিসেবে কর্মজীবনে সবচেয়ে বেশি আলোচিত ছিল তার কঠোর এবং প্রভাবশালী শুনানি, যেখানে তিনি বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের কঠিন প্রশ্নের সম্মুখীন করতেন। সিনেটে তার সময়ে, হ্যারিস অভিবাসন সংস্কার এবং স্বাস্থ্যসেবা নীতিতে পরিবর্তনের পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছিলেন। তিনি “মেডিকেয়ার ফর অল” (সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা) নীতির পক্ষে কথা বলেছেন এবং স্বাস্থ্যসেবা খাতে বড় ধরনের সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন। একই সঙ্গে তিনি নাগরিক অধিকার রক্ষায় কঠোর ভূমিকা পালন করেছেন। বিশেষ করে আফ্রিকান-আমেরিকান ও অন্যান্য সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর প্রতি বৈষম্য দূর করতে তিনি আইন প্রণয়নের প্রয়াস চালিয়েছেন। উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন ও ঐতিহাসিক বিজয় ২০২০ সালের মার্কিন নির্বাচনে, ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেন তার রানিং মেট হিসেবে কমলা হ্যারিসকে বেছে নেন। এই সিদ্ধান্তটি তাৎপর্যপূর্ণ ছিল, কারণ হ্যারিস প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ এবং দক্ষিণ এশীয় নারী যিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপরাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হন। নির্বাচনী প্রচারণায়, হ্যারিস বারবার সমাজের সকল শ্রেণির মানুষের জন্য সমান অধিকার এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি স্বাস্থ্যসেবা, অর্থনৈতিক সমতা এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিলেন। ২০২০ সালের নভেম্বরে, জো বাইডেন এবং কমলা হ্যারিস নির্বাচনে বিজয়ী হন, এবং ২০২১ সালের জানুয়ারিতে তারা যথাক্রমে প্রেসিডেন্ট এবং উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন। এই জয়ে, কমলা হ্যারিস মার্কিন ইতিহাসে প্রথম নারী উপরাষ্ট্রপতি এবং প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ও দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত নারী হিসেবে ইতিহাস গড়েন। নেতৃত্বের গুণাবলী কমলা হ্যারিসের নেতৃত্বের গুণাবলী নিয়ে অনেক প্রশংসা রয়েছে। তিনি একজন সাহসী, সৎ এবং দৃঢ়প্রতিজ্ঞ নেত্রী। তার রাজনৈতিক দর্শন ন্যায়বিচার, সাম্য এবং মানবাধিকারের উপর ভিত্তি করে। তিনি সবসময় এমন একটি সমাজ গড়ার পক্ষে কথা বলেছেন যেখানে সবাই সমান অধিকার ভোগ করবে এবং কারও প্রতি বৈষম্য করা হবে না। তার নেতৃত্বের একটি বড় দিক হল তিনি সবসময় নারীদের ক্ষমতায়নের পক্ষে কথা বলেছেন এবং নিজে একজন সফল নারী নেত্রী হিসেবে সেই উদাহরণও স্থাপন করেছেন। হ্যারিসের আরেকটি উল্লেখযোগ্য গুণ হলো, তিনি সকল শ্রেণির মানুষের কথা শোনেন এবং তাদের সমস্যাগুলো বোঝার চেষ্টা করেন। তিনি সবসময় জনগণের কল্যাণের জন্য কাজ করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার জুড়ে তিনি সাধারণ মানুষের পক্ষে কাজ করেছেন এবং তাদের অধিকার রক্ষার জন্য লড়াই করেছেন।  প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে ২০২৪ নির্বাচন ২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কমলা হ্যারিস ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তার এই প্রার্থীতা মার্কিন রাজনীতিতে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের সূচনা করবে। হ্যারিস তার প্রচারণায় স্বাস্থ্যসেবা, অর্থনৈতিক সমতা, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের মতো ইস্যুগুলোর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।  স্বাস্থ্যসেবা নীতি: স্বাস্থ্যসেবা সংস্কারের বিষয়ে হ্যারিস দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করে আসছেন। তার “মেডিকেয়ার ফর অল” নীতি জনগণের মধ্যে জনপ্রিয়। তিনি বিশ্বাস করেন, প্রতিটি মানুষের জন্য মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া একটি মৌলিক অধিকার। তার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় স্বাস্থ্যসেবা সংস্কার একটি বড় ইস্যু হিসেবে থাকতে পারে।  জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার বিষয়েও হ্যারিস দৃঢ় অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, এটি বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলির একটি। তার প্রচারণায় নবায়নযোগ্য শক্তি, সবুজ কর্মসংস্থান এবং পরিবেশ রক্ষায় বিনিয়োগের প্রতিশ

Read More

জিংক সমৃদ্ধ ধানের জাত: ব্রি ধান৬২

জিংক সমৃদ্ধ  ধান-৬২ বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ, যেখানে ধান চাষ দেশীয় কৃষির অন্যতম প্রধান শস্য। ধান দেশের প্রধান খাদ্যশস্য এবং দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭০ শতাংশের খাদ্যনিরাপত্তা নির্ভর করে এই ফসলের উপর। তবে শুধুমাত্র খাদ্য উৎপাদন নয়, খাদ্যের পুষ্টিমান উন্নত করাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পুষ্টিহীনতা বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে একটি বড় সমস্যা। বিশেষ করে দেহের জন্য অপরিহার্য খনিজ পদার্থগুলোর ঘাটতি, যেমন জিংকের অভাব, স্বাস্থ্যের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। জিংকের অভাবে শিশুদের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এবং সংক্রামক রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। এই সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (BRRI) জিংক সমৃদ্ধ ধানের জাত উদ্ভাবনের জন্য কাজ করছে। এরই ফলশ্রুতিতে উদ্ভাবিত হয়েছে “ব্রি ধান৬২”, যা উচ্চমাত্রার জিংক সমৃদ্ধ একটি বিশেষ ধানের জাত। এই ধানের জাতটি খাদ্যশৃঙ্খলে জিংকের ঘাটতি পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে সক্ষম।  ব্রি ধান৬২: উৎপত্তি ও বৈশিষ্ট্য ব্রি ধান৬২ হলো বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (BRRI) এক অন্যতম উদ্ভাবন, যা জিংকের পরিমাণ বাড়িয়ে মানুষের পুষ্টি চাহিদা মেটানোর লক্ষ্য নিয়ে উদ্ভাবিত হয়েছে। এই জাতটি ২০১৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বাজারজাত করা হয়। গবেষণার মাধ্যমে দেখা গেছে, এই ধানে প্রতি কেজিতে ২৪-২৫ মিলিগ্রাম জিংক থাকে, যা স্বাভাবিক ধানের চেয়ে অনেক বেশি। সাধারণত অন্যান্য ধানে জিংকের পরিমাণ ১৬-১৮ মিলিগ্রামের মধ্যে থাকে। ব্রি ধান৬২ এর জিংক সমৃদ্ধ বৈশিষ্ট্য এবং উচ্চ ফলনশীলতা একে কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় করেছে। বৈশিষ্ট্যসমূহ: 1. জিংক সমৃদ্ধ: ব্রি ধান৬২ প্রতি কেজি চালে ২৪-২৫ মিলিগ্রাম জিংক ধারণ করে, যা দেহের জন্য অপরিহার্য খনিজের চাহিদা পূরণে সহায়ক। 2. ফসলের সময়কাল: ব্রি ধান৬২ এর ফসল সংগ্রহের সময়কাল প্রায় ১৪৫ দিন, যা মোটামুটি মধ্যম সময়ের ধানের জাত হিসেবে গণ্য করা হয়। 3. উচ্চ ফলনশীলতা: এই জাতটির ফলনশীলতা খুব ভালো। হেক্টরপ্রতি প্রায় ৫-৬ টন চাল উৎপাদন করা সম্ভব। 4. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা: ব্রি ধান৬২ রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে শক্তিশালী। ব্লাস্ট এবং ব্যাকটেরিয়াল লিফ ব্লাইটের মতো প্রধান ধানের রোগগুলোর বিরুদ্ধে এর সহনশীলতা রয়েছে।  জিংকের গুরুত্ব এবং ব্রি ধান৬২ এর ভূমিকা জিংক একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খনিজ যা মানবদেহের বিভিন্ন কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি প্রায় ৩০০ ধরনের এনজাইমের কার্যক্ষমতা বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং কোষ বিভাজন, বৃদ্ধির নিয়ন্ত্রণ এবং রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার জন্য অত্যাবশ্যক। শিশুদের শারীরিক এবং মানসিক বিকাশে জিংকের ঘাটতি বড় ধরনের প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো দেশে, যেখানে বেশিরভাগ মানুষের প্রধান খাদ্য ধান-ভিত্তিক, সেখানে জিংকের অভাবজনিত সমস্যা খুবই সাধারণ। জিংকের অভাবজনিত সমস্যা: – শিশুদের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। – রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। – গর্ভবতী নারীদের জন্য জিংকের ঘাটতি গর্ভের সন্তানের বিকাশে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। – ক্ষত সারানোর ক্ষমতা কমে যায়। – ত্বক এবং চুলের স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। বাংলাদেশে ধানের প্রধান খাদ্যশস্য হওয়ার কারণে, ধানের মাধ্যমে জিংকের ঘাটতি পূরণের চেষ্টা অত্যন্ত কার্যকর। ব্রি ধান৬২ এই ক্ষেত্রে একটি বড় সফলতা, কারণ এই ধানের মাধ্যমে মানুষের প্রতিদিনের জিংকের প্রয়োজনীয়তার একটি বড় অংশ পূরণ করা সম্ভব। একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির দৈনিক ১২-১৫ মিলিগ্রাম জিংকের প্রয়োজন হয়। ব্রি ধান৬২ খেলে একজন ব্যক্তি তার জিংকের চাহিদার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ সহজেই পূরণ করতে পারে। জিংক সমৃদ্ধ  ধান-৬২ চাষাবাদ পদ্ধতি ব্রি ধান৬২ এর চাষাবাদ পদ্ধতি খুবই সহজ এবং এটি অন্যান্য সাধারণ ধানের মতোই চাষ করা যায়। তবে কিছু বিশেষ বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন যাতে করে সর্বোচ্চ ফলন নিশ্চিত করা যায়। জমি প্রস্তুতি: – ভালো ফলনের জন্য, মাটির স্বাস্থ্য ভালো থাকা জরুরি। মাটিতে জৈব সার এবং রাসায়নিক সার সঠিক অনুপাতে প্রয়োগ করা উচিত। – চারা রোপণের আগে জমি ভালোভাবে চাষ করে সমান করতে হবে। – জমিতে পানি ধরে রাখার ক্ষমতা বাড়াতে হলে সেচ ব্যবস্থা উন্নত করতে হবে। বীজতলা প্রস্তুতি: – সুস্থ এবং শক্তিশালী চারা উৎপাদনের জন্য ভালো মানের বীজ নির্বাচন করা জরুরি। – বীজতলা তৈরির সময় জমির পরিচর্যা ভালোভাবে করতে হবে এবং আগাছা পরিষ্কার রাখতে হবে। চারা রোপণ: – বীজতলায় চারা প্রায় ২০-২৫ দিন বয়সে রোপণের জন্য প্রস্তুত হয়। – প্রতি গুচ্ছ চারায় ২-৩টি চারা রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়, যাতে চারা দ্রুত বৃদ্ধি পায়। – জমির অবস্থা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় দূরত্বে চারা রোপণ করতে হবে। সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা: – ধানের সঠিক বৃদ্ধির জন্য সেচের প্রয়োজন। ব্রি ধান৬২ এর ক্ষেত্রেও সময়মতো সেচ প্রদান করা জরুরি। – ধানক্ষেত সর্বদা আর্দ্র রাখা উচিত এবং ফসলের প্রতিটি ধাপে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ করা প্রয়োজন। সার প্রয়োগ: – মাটির উর্বরতা অনুযায়ী সঠিক মাত্রায় সার প্রয়োগ করতে হবে। – নাইট্রোজেন, ফসফরাস এবং পটাশ সার সঠিকভাবে প্রয়োগ করা দরকার। – ফসলের ভালো ফলনের জন্য, বোরন এবং জিংক সমৃদ্ধ সার ব্যবহার করা যেতে পারে। ধানের রোগ ও পোকামাকড় প্রতিরোধ ব্রি ধান৬২ তুলনামূলকভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকলেও, কিছু প্রধান রোগ এবং পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে সুরক্ষা দেওয়া প্রয়োজন। এর মধ্যে কয়েকটি প্রধান সমস্যা হল: ধানের ব্লাস্ট রোগ: এই রোগটি ধানের পাতায় দাগ সৃষ্টি করে এবং ফসলের ফলনকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এই রোগ প্রতিরোধে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ এবং প্রয়োজনীয় ছত্রাকনাশক ব্যবহার করা উচিত। ব্যাকটেরিয়াল লিফ ব্লাইট: এটি ধানের একটি ব্যাকটেরিয়াল রোগ যা পাতার ক্ষতি করে। এর প্রতিরোধে ফসলের সঠিক পরিচর্যা ও নিয়মিত ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করতে হবে। বাদামি গাছ ফড়িং: এটি ধানের অন্যতম প্রধান ক্ষতিকারক পোকা। এই পোকার আক্রমণ থেকে ফসলকে বাঁচাতে উপযুক্ত কীটনাশক ব্যবহার করা প্রয়োজন।  ব্রি ধান৬২ এর প্রভাব ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা ব্রি ধান৬২ এর উদ্ভাবন বাংলাদেশের পুষ্টিগত চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক। এটি শুধুমাত্র জিংক সমৃদ্ধ ধানের একটি নতুন জাত নয়, বরং এটি খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। বাংলাদেশে দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর জন্য এই ধান পুষ্টির একটি সাশ্রয়ী উৎস হতে পারে। ব্রি ধান৬২ এর চাষ বৃদ্ধি পেলে এবং এটি দেশের সকল অঞ্চলে ব্যাপকভাবে গ্রহণ করা হলে দেশের পুষ্টিহীনতার সমস্যা অনেকাংশে কমে আসবে। বিশেষ করে শিশু ও নারীদের মধ্যে জিংকের ঘাটতি দূরীকরণে এই ধান ব্যাপক ভূমিকা পালন করবে। এ ছাড়াও, বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে জিংক সমৃদ্ধ ধানের উদ্ভাবন উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য একটি বড় সুযোগ সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের ধারাবাহিক প্রচেষ্টায় ব্রি ধান৬২ এর মতো আরও উন্নত পুষ্টিমান সমৃদ্ধ ধানের জাত উদ্ভাবন ভবিষ্যতে প্রত্যাশিত। পাশাপাশি, কৃষকদের জন্য সহজলভ  

Read More
মুহাম্মদ ইউনূস

ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুস এবং বর্তমান বাংলাদেশ

ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুস এবং বর্তমান বাংলাদেশ ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুস বাংলাদেশের একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অর্থনীতিবিদ, সমাজকর্মী এবং মানবতাবাদী। মাইক্রোক্রেডিট ও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তাঁর অবদান শুধু বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন নয়, বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য বিমোচন ও নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে বিশাল ভূমিকা পালন করেছে। তিনি ২০০৬ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন, যা তাঁকে একজন আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে আরও প্রসিদ্ধ করে তোলে। বর্তমান বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে ডক্টর ইউনুসের ভূমিকা ও তার কার্যক্রম নিয়ে নানা ধরনের বিতর্ক এবং আলোচনা রয়েছে। এই প্রবন্ধে তাঁর জীবনী, অবদান, এবং বর্তমান বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তাঁর অবস্থান নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুসের জীবনী ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুস ১৯৪০ সালে চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর শিক্ষাজীবন অত্যন্ত উজ্জ্বল ছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করার পর তিনি ফুলব্রাইট বৃত্তি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যান এবং সেখানে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে দেশে ফিরে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের সময় তিনি দেশের কৃষক ও দরিদ্র মানুষদের দুঃখ-কষ্ট প্রত্যক্ষ করেন, যা তাঁর ভবিষ্যতের কাজকে অনুপ্রাণিত করে। এই সংকট থেকেই তিনি গ্রামীণ ব্যাংক এবং মাইক্রোক্রেডিট ধারণার বিকাশ ঘটান, যা দারিদ্র্য বিমোচনের এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আসে। গ্রামীণ ব্যাংক এবং মাইক্রোক্রেডিট ১৯৭৬ সালে ডক্টর ইউনুস চট্টগ্রামের জোবরা গ্রামে ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্পের মাধ্যমে মাইক্রোক্রেডিটের ধারণা শুরু করেন। তাঁর এই উদ্যোগের লক্ষ্য ছিল দরিদ্র মানুষদের, বিশেষত নারীদের, সামান্য মূলধন দিয়ে স্বনির্ভরতা অর্জনের সুযোগ করে দেওয়া। এরপর তিনি ১৯৮৩ সালে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন, যা বিশ্বের প্রথম মাইক্রোফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। গ্রামীণ ব্যাংকের বিশেষত্ব হলো, এখানে প্রচলিত ব্যাংকিং ব্যবস্থার বাইরে থাকা দরিদ্র মানুষদের ঋণ দেওয়া হয়, কোনোরকম জামানত ছাড়াই। এই ঋণের মাধ্যমে ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করে এবং নিজেরা স্বাবলম্বী হতে পারে। মূলত নারীদের ক্ষমতায়ন এবং দারিদ্র্য বিমোচনের ক্ষেত্রে গ্রামীণ ব্যাংক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। ডক্টর ইউনুসের মাইক্রোক্রেডিট মডেল সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন দেশে গৃহীত হয়। এই মডেলটির সফলতা তাঁকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খ্যাতি এনে দেয় এবং ২০০৬ সালে তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। বর্তমান বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুস   রাজনৈতিক বিতর্ক এবং চ্যালেঞ্জসমূহ ডক্টর ইউনুস বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিশাল অবদান রাখলেও, সাম্প্রতিক সময়ে তিনি রাজনৈতিক বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। ২০১১ সালে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে অবসর নেওয়ার সময় আইনি ও প্রশাসনিক জটিলতার মুখোমুখি হন। তৎকালীন সরকারের সাথে তাঁর সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়। ডক্টর ইউনুসের একটি উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক পদক্ষেপ ছিল, তিনি ২০০৭ সালে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। যদিও সেই উদ্যোগ সফল হয়নি, তবুও এই পদক্ষেপ তাঁকে রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসে। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে সরকার তাঁকে কর ফাঁকির অভিযোগে এবং অন্যান্য আইনি জটিলতায় জড়ানোর চেষ্টা করেছে।   গ্রামীণ ব্যাংকের ভবিষ্যৎ গ্রামীণ ব্যাংকের সাথে ডক্টর ইউনুসের সম্পর্ক বর্তমান সরকারের সাথে তিক্ত হয়ে ওঠে, যখন সরকার গ্রামীণ ব্যাংকের ওপর নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়। সরকার দাবি করে যে, গ্রামীণ ব্যাংক একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের মতো পরিচালিত হওয়া উচিত, যেখানে সরকার প্রধান ভূমিকা পালন করবে। অন্যদিকে ডক্টর ইউনুস এবং তাঁর সমর্থকরা মনে করেন যে, গ্রামীণ ব্যাংককে একটি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হতে দেওয়া উচিত।   আন্তর্জাতিক সমর্থন এবং সমালোচনা ডক্টর ইউনুস আন্তর্জাতিকভাবে এখনও একজন সম্মানিত ব্যক্তিত্ব হিসেবে বিবেচিত হন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংগঠন তাঁর মাইক্রোক্রেডিট মডেলকে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং এখনও তাকে দারিদ্র্য বিমোচন ও সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে একজন অগ্রগণ্য ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করে। তবে বাংলাদেশে রাজনৈতিক মহলে তাঁর সমালোচকরা মনে করেন যে, ডক্টর ইউনুস বিদেশি সমর্থন কাজে লাগিয়ে দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করছেন। তাঁর অর্থনৈতিক নীতির কার্যকারিতা নিয়ে দেশে-বিদেশে কিছু বিতর্ক রয়েছে।   সাম্প্রতিক উদ্যোগ এবং সামাজিক ব্যবসা ডক্টর ইউনুস বর্তমানে সামাজিক ব্যবসার ধারণা নিয়ে কাজ করছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, সামাজিক ব্যবসা বা সোশ্যাল বিজনেসের মাধ্যমে মানুষের সমস্যাগুলো সমাধান করা সম্ভব, যেখানে মূল লক্ষ্য মুনাফা নয় বরং সমাজের কল্যাণ সাধন। তাঁর সোশ্যাল বিজনেস উদ্যোগের মাধ্যমে তিনি দারিদ্র্য দূরীকরণ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে নতুন সুযোগ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন। সামাজিক ব্যবসার ধারণা অনুযায়ী, ব্যবসা পরিচালনা করে ব্যবসার মালিকরা শুধুমাত্র নিজেদের বিনিয়োগের টাকা ফেরত পাবেন, কিন্তু ব্যবসার থেকে মুনাফা নেওয়া হবে না। এর মাধ্যমে সমাজের দুর্বল অংশগুলোকে সহায়তা করা হবে। বাংলাদেশের সমাজে ডক্টর ইউনুসের প্রভাব ডক্টর ইউনুসের কাজ এবং চিন্তাধারা বাংলাদেশের সমাজের বিভিন্ন স্তরে গভীর প্রভাব ফেলেছে। বিশেষ করে নারীদের ক্ষমতায়ন, দারিদ্র্য বিমোচন এবং সামাজিক উন্নয়নে তাঁর উদ্যোগগুলো ব্যাপকভাবে প্রশংসিত। গ্রামীণ ব্যাংকের মাধ্যমে নারীরা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছে এবং দেশের গ্রামীণ অর্থনীতিতে নতুন জীবন এসেছে। তাঁর মাইক্রোক্রেডিট মডেল বাংলাদেশে প্রভাবশালী উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের রূপান্তর ঘটিয়েছে। যদিও বর্তমান সরকার ও ডক্টর ইউনুসের মধ্যে রাজনৈতিক মতপার্থক্য রয়েছে, তারপরও তাঁর কাজ এবং অবদান দেশের সাধারণ জনগণের মধ্যে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়। উপসংহার ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুস বাংলাদেশের ইতিহাসে একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, যিনি অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত। তাঁর মাইক্রোক্রেডিট এবং গ্রামীণ ব্যাংক মডেল বাংলাদেশের দারিদ্র্য বিমোচনের একটি কার্যকরী হাতিয়ার হিসেবে কাজ করেছে। তবে বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তাঁর অবস্থান এবং কর্মকাণ্ড নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে। তবে, এই বিতর্কের মাঝেও তাঁর সামাজিক ব্যবসা এবং দারিদ্র্য বিমোচনের উদ্দেশ্য তাঁকে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এবং ভবিষ্যতের জন্য উদ্যমী নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

Read More
টমেটো চাষাবাদ

টমেটো: চাষাবাদ- রোগবালাই-জনপ্রিয় জাত এবং মৌসুম

টমেটো : টমেটো বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় সবজি। এটি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সারা বছর চাষ করা হয়, বিশেষ করে শীতকালীন সবজি হিসেবে এর চাহিদা বেশি। টমেটো শুধুমাত্র সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর নয়, এটি খাদ্য প্রস্তুতিতে বহুল ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশের কৃষি ক্ষেত্রে টমেটো চাষ একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত হিসেবে বিবেচিত হয়। টমেটো (বৈজ্ঞানিক নাম): Solanum lycopersicum সোলানাসি গোত্রের অন্তর্গত একটি ফল যা সবজি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। টমেটো সবজি হিসেবে খাবারের স্বাদ ও পুষ্টি বৃদ্ধি করে। টমেটো সাধারণত সালাদ, তরকারি, চাটনি, এবং বিভিন্ন ধরনের রান্নায় ব্যবহৃত হয়। পুষ্টির পাশাপাশি এটি বাণিজ্যিক দিক থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। টমেটো চাষাবাদ টমেটো চাষাবাদ করতে গেলে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হয়, যেমন উপযুক্ত মাটি, সঠিক জলবায়ু, এবং পর্যাপ্ত সেচ ব্যবস্থা। টমেটো চাষের জন্য কিছু মৌলিক ধাপ হলো:  ১. মাটি ও জলবায়ু টমেটো চাষের জন্য উঁচু, দোঁআশ মাটি ও উর্বর জমি সবচেয়ে উপযুক্ত। মাটির pH মান ৫.৫ থেকে ৬.৮ এর মধ্যে হলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। টমেটো এমন এক ধরনের ফসল যা সুনির্দিষ্ট জলবায়ুতে ভালোভাবে বাড়ে। শীতল থেকে উষ্ণমণ্ডলীয় আবহাওয়া এর জন্য আদর্শ, তবে গরম ও শুষ্ক আবহাওয়ায় টমেটোর ফলন কম হতে পারে। মাটির সঠিক নিষ্কাশন ব্যবস্থা থাকা উচিত, যাতে জমিতে পানি জমে না থাকে।  ২. সেচ ব্যবস্থা টমেটো চাষের জন্য সঠিক সেচ ব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চারা লাগানোর পর নিয়মিত সেচ প্রয়োজন হয়, বিশেষত শুষ্ক মৌসুমে। সেচ দেওয়ার সময় জমিতে অতিরিক্ত পানি না জমা দেয়া উচিত। মাটির আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণের জন্য ঝুঁড়ি বা স্প্রিংকলার পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে।  ৩. সার প্রয়োগ টমেটো চাষে পুষ্টিকর মাটির ভূমিকা অপরিসীম। এজন্য সঠিক পরিমাণে সার ব্যবহার করতে হবে। জৈব সার যেমন গোবর সার এবং কম্পোস্ট সার ব্যবহার করলে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়। এছাড়া রাসায়নিক সার হিসেবে ইউরিয়া, টিএসপি, এবং এমওপি সঠিকভাবে প্রয়োগ করা উচিত।  ৪. ফসল সংগ্রহ টমেটো সাধারণত বীজ বপনের ৭০-৮০ দিনের মধ্যে সংগ্রহযোগ্য হয়। টমেটো সম্পূর্ণ লাল রং ধারণ করলে তা সংগ্রহ করা হয়। টমেটো ফসল সংগ্রহ করার জন্য নরম হাতে কাটা দরকার, যাতে ফল নষ্ট না হয়।  টমেটোর রোগবালাই টমেটো চাষে অনেক ধরনের রোগবালাই দেখা দেয়, যা ফসলের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। কিছু সাধারণ রোগবালাই ও প্রতিকার নিচে উল্লেখ করা হলো:  ১. পোড়া রোগ (Blight) পোড়া রোগ একটি ছত্রাকজনিত রোগ, যা পাতায় বাদামী দাগ সৃষ্টি করে এবং টমেটোর গাছ দ্রুত শুকিয়ে যায়। প্রতিকার:  ছত্রাকনাশক স্প্রে ব্যবহার করে গাছের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব। এছাড়া রোগমুক্ত বীজ ব্যবহার করা উচিত।  ২. ফলের পচা রোগ (Fruit Rot) ফলের পচা রোগের কারণে টমেটো ফল পচে যায় এবং ফলন কমে যায়। প্রতিকার:  পর্যাপ্ত পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা এবং রোগ প্রতিরোধক জাত ব্যবহার করে এ সমস্যা সমাধান করা যায়।  ৩. জাবপোকা আক্রমণ জাবপোকা টমেটোর পাতার রস শোষণ করে, যা গাছের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত করে এবং ফলের মান কমিয়ে দেয়। প্রতিকার:  সঠিক পোকা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, যেমন কীটনাশক স্প্রে, ব্যবহার করা যেতে পারে।  ৪. লিফ কার্ল ভাইরাস এই ভাইরাসের কারণে টমেটোর পাতা কুঁকড়ে যায় এবং গাছের বৃদ্ধিতে সমস্যা দেখা দেয়। প্রতিকার:  রোগ প্রতিরোধক জাত ব্যবহার করা এবং জমিতে নিয়মিত পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখলে এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।  জনপ্রিয় টমেটো জাত (বাংলাদেশ) বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের টমেটো চাষ করা হয়, যেগুলো স্থানীয় চাহিদা এবং জলবায়ু অনুযায়ী উপযোগী। কিছু জনপ্রিয় টমেটো জাত হলো:  ১. মানিক মানিক একটি উচ্চ ফলনশীল টমেটো জাত, যা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চাষ করা হয়। এর ফল বড় ও লাল রঙের হয়।  ২. BARI টমেটো-১৪ এটি বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের উন্নত জাত, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও উচ্চ ফলনের জন্য পরিচিত।  ৩. রূপালী রূপালী জাতটি সাধারণত শীতকালে চাষ করা হয় এবং এর ফল বড় ও সুমিষ্ট হয়।  ৪. রতন রতন জাতের টমেটো বেশ জনপ্রিয়, কারণ এটি দ্রুত ফলন দেয় এবং ফলের আকার মাঝারি।  টমেটো চাষের মৌসুম বাংলাদেশে টমেটোর প্রধান চাষের মৌসুম হলো শীতকাল। সাধারণত অক্টোবর থেকে জানুয়ারির মধ্যে টমেটোর বীজ বপন করা হয় এবং ফল সংগ্রহ করা হয় জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে। তবে কিছু জাত আছে, যা সারা বছর চাষ করা যায়। শীত মৌসুমে টমেটোর ফলন ভালো হয় এবং ফসলের রোগবালাই কম হয়।  মোট আবাদকৃত জমির পরিমাণ বাংলাদেশে টমেটো চাষের পরিমাণ ক্রমাগত বাড়ছে। টমেটোর চাহিদা দিন দিন বাড়ার কারণে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আবাদকৃত জমির পরিমাণও বেড়ে চলেছে। বর্তমান তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে টমেটোর চাষ করা হয়। দেশের প্রধান টমেটো উৎপাদনকারী অঞ্চলগুলো হলো রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, এবং চট্টগ্রাম অঞ্চল। টমেটোর বাণিজ্যিক চাষে কৃষকরা ভালো মুনাফা অর্জন করছে এবং দেশের অর্থনীতিতেও এ খাতের অবদান বাড়ছে।  উপসংহার বাংলাদেশে টমেটো চাষ একটি জনপ্রিয় এবং লাভজনক কৃষি কার্যক্রম। টমেটোর উচ্চ পুষ্টিমান এবং বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকার কারণে কৃষকরা এটি চাষে উৎসাহিত হচ্ছে। সঠিক সময়ে রোগবালাই নিয়ন্ত্রণ, উপযুক্ত জাত নির্বাচন এবং পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে চাষ করলে টমেটো চাষ থেকে ভালো লাভ করা সম্ভব।  

Read More
ফুটবল গতির দানব ২০২৪ কিলিয়ান এমবাপ্পে

কিলিয়ান এমবাপ্পে : ফুটবল গতির দানব-২০২৪

সর্বোচ্চ গতির ৫ জন ফুটবলার: ফুটবল বিশ্বে গতি একটি গুরুত্বপূর্ণ গুণ। একজন ফুটবলারের গতির ওপর নির্ভর করে তার প্রতিপক্ষকে সহজেই পরাস্ত করা, গোল করার সুযোগ তৈরি করা এবং দলকে সাফল্য এনে দেওয়া। ফুটবল ইতিহাসে অনেক খেলোয়াড় তাদের বিস্ময়কর গতির কারণে বিখ্যাত হয়েছেন। এই নিবন্ধে আমরা সর্বোচ্চ গতির ৫ জন ফুটবলারের নাম, জন্মসাল, জনপ্রিয়তা, ক্লাব, জাতীয় দল, ট্রফি, এবং বাণিজ্যিক মূল্য সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানব। ১. কিলিয়ান এমবাপ্পে নাম: কিলিয়ান এমবাপ্পে  জন্মসাল: ২০ ডিসেম্বর, ১৯৯৮  জনপ্রিয়তা:  কিলিয়ান এমবাপ্পে বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা ফুটবলার। ফ্রান্সের প্যারিসে জন্ম নেওয়া এই ফুটবলার অত্যন্ত তরুণ বয়সেই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নজর কেড়েছেন। তার আশ্চর্যজনক গতি, ড্রিবলিং দক্ষতা, এবং গোল করার ক্ষমতা তাকে বিশ্বের সেরা আক্রমণভাগের খেলোয়াড়দের একজন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এমবাপ্পে শুধুমাত্র মাঠে নয়, মাঠের বাইরেও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন তার অসাধারণ ব্যক্তিত্ব ও ফুটবল দক্ষতার জন্য। ক্লাব:  কিলিয়ান এমবাপ্পে বর্তমানে ফরাসি ক্লাব প্যারিস সেন্ট-জার্মেইন (পিএসজি)-তে খেলছেন। ২০১৭ সালে তিনি এই ক্লাবে যোগ দেন, এবং তার পর থেকেই তিনি ক্লাবের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের একজন হয়ে উঠেছেন। জাতীয় দল:  ফ্রান্সের জাতীয় দলের হয়ে এমবাপ্পে ২০১৮ সালের বিশ্বকাপ জয়ী দলটির অন্যতম প্রধান সদস্য ছিলেন। তিনি টুর্নামেন্টে তার চমকপ্রদ পারফরম্যান্সের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করেন এবং ফাইনালে গোল করে নিজের নাম ইতিহাসে স্থাপন করেন। ট্রফি:  এমবাপ্পের ক্যারিয়ারে ইতিমধ্যেই অনেক ট্রফি রয়েছে। পিএসজি ক্লাবের হয়ে তিনি লিগ ১ শিরোপা, ফরাসি কাপ এবং অন্যান্য ঘরোয়া প্রতিযোগিতা জিতেছেন। ২০১৮ সালে তিনি ফ্রান্সকে বিশ্বকাপ জয় এনে দেন, যা তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় সাফল্য। বাণিজ্যিক মূল্য:  এমবাপ্পের বাণিজ্যিক মূল্য অত্যন্ত বেশি। তিনি অনেক বড় বড় ব্র্যান্ডের সাথে চুক্তিবদ্ধ, যার মধ্যে নাইকি এবং হাবলোত অন্যতম। তার বাণিজ্যিক মূল্য প্রায় ২০০ মিলিয়ন ইউরোর উপরে, যা তাকে বিশ্বের অন্যতম ধনী ফুটবলারদের একজন করে তুলেছে।    ২. আদামা ত্রাওর নাম: আদামা ত্রাওর  জন্মসাল: ২৫ জানুয়ারি, ১৯৯৬  জনপ্রিয়তা:  আদামা ত্রাওর মূলত তার শারীরিক শক্তি এবং গতি দিয়ে পরিচিত। স্পেনের বার্সেলোনায় জন্মগ্রহণ করা ত্রাওর তার দারুণ শারীরিক ফিটনেস এবং গতি দিয়ে প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করতে পারেন। তার সঠিক পজিশনিং এবং গতি তাকে ইউরোপের সেরা উইঙ্গারদের একজন করে তুলেছে। তিনি বিশেষত তার দুর্দান্ত দৌড়ানোর ক্ষমতার জন্য পরিচিত, যা তাকে রক্ষণের মধ্য দিয়ে দ্রুত চলতে সহায়তা করে। ক্লাব:  ত্রাওর বর্তমানে প্রিমিয়ার লিগের উলভারহ্যাম্পটন ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের হয়ে খেলছেন। তার গতি এবং আক্রমণাত্মক খেলার ধরন তাকে ক্লাবের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের একজন হিসেবে গড়ে তুলেছে। জাতীয় দল:  ত্রাওর স্পেনের জাতীয় দলের হয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে প্রতিনিধিত্ব করছেন। যদিও তার জাতীয় দলে খেলার সুযোগ কম, তবে তিনি ইউরোপের শীর্ষ ফুটবলারদের একজন হিসেবে পরিচিত। ট্রফি:  ত্রাওরের ক্যারিয়ারে এখনো তেমন বড় ট্রফি জেতা সম্ভব হয়নি, তবে তিনি ব্যক্তিগতভাবে অনেক প্রশংসা অর্জন করেছেন। তার গতি এবং দক্ষতার জন্য তিনি অনেক ফুটবল পণ্ডিত এবং ভক্তদের কাছে প্রিয় খেলোয়াড়। বাণিজ্যিক মূল্য:  আদামা ত্রাওরের বাণিজ্যিক মূল্যও বেশ উঁচু। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সাথে চুক্তিবদ্ধ থাকলেও তার মূল বাণিজ্যিক মূল্য নির্ধারণ করা হয় তার গতি এবং খেলার দক্ষতার ভিত্তিতে। তার বর্তমান বাণিজ্যিক মূল্য প্রায় ৩০ মিলিয়ন ইউরো।    ৩. আলফোনসো ডেভিস নাম: আলফোনসো ডেভিস  জন্মসাল: ২ নভেম্বর, ২০০০  জনপ্রিয়তা:  আলফোনসো ডেভিস কানাডার একজন তরুণ ফুটবলার, যিনি তার বিস্ময়কর গতি এবং ড্রিবলিং দক্ষতার জন্য বিখ্যাত। ডেভিসের মূল জনপ্রিয়তা আসে তার অল্প সময়ের মধ্যে সাফল্য অর্জন করা থেকে। তার চমৎকার প্রতিরক্ষা এবং আক্রমণাত্মক দক্ষতা তাকে আধুনিক যুগের অন্যতম সেরা লেফট ব্যাক করে তুলেছে। তার অসাধারণ গতি তাকে বিশ্বের দ্রুততম ফুটবলারদের মধ্যে স্থান দিয়েছে। ক্লাব:  আলফোনসো ডেভিস বর্তমানে জার্মানির বিখ্যাত ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখে খেলছেন। তিনি ক্লাবটির হয়ে একাধিকবার বুন্দেসলিগা এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছেন। জাতীয় দল:  কানাডার জাতীয় দলের হয়ে আলফোনসো ডেভিস খেলছেন এবং তিনি ইতোমধ্যেই দলের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় হিসেবে পরিচিত হয়েছেন। তিনি দলের আক্রমণভাগের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ট্রফি:  ডেভিস বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে বুন্দেসলিগা শিরোপা, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, এবং ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ জিতেছেন। তার তরুণ বয়সে এই ট্রফিগুলো তাকে অন্যতম প্রতিশ্রুতিশীল খেলোয়াড় হিসেবে পরিচিত করেছে। বাণিজ্যিক মূল্য:  ডেভিসের বাণিজ্যিক মূল্য অত্যন্ত উঁচু। তিনি নিকি এবং অন্যান্য ব্র্যান্ডের সাথে চুক্তিবদ্ধ আছেন। তার বাণিজ্যিক মূল্য প্রায় ৫০ মিলিয়ন ইউরো।    ৪. আশরাফ হাকিমি নাম: আশরাফ হাকিমি  জন্মসাল: ৪ নভেম্বর, ১৯৯৮  জনপ্রিয়তা:  মরক্কোর ডিফেন্ডার আশরাফ হাকিমি তার অসাধারণ গতি এবং প্রভাবশালী আক্রমণাত্মক খেলার জন্য পরিচিত। হাকিমি ইতালির ইন্টার মিলান থেকে ইউরোপের সেরা খেলোয়াড়দের একজন হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তার জনপ্রিয়তা তার গতি এবং ড্রিবলিং ক্ষমতার কারণে দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। ক্লাব:  হাকিমি বর্তমানে ফরাসি ক্লাব প্যারিস সেন্ট-জার্মেইন (পিএসজি)-তে খেলছেন। পিএসজিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে তিনি দলের আক্রমণাত্মক ডিফেন্ডার হিসেবে বেশ প্রশংসিত হয়েছেন। জাতীয় দল:  হাকিমি মরক্কোর জাতীয় দলের অন্যতম প্রধান খেলোয়াড়। তার গতি এবং ডিফেন্ডিং দক্ষতা তাকে দলের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ করে তুলেছে। ট্রফি:  হাকিমি ইতোমধ্যেই ইন্টার মিলানের হয়ে সিরি আ শিরোপা জিতেছেন এবং পিএসজির হয়ে লিগ ১ শিরোপা জিতেছেন। এছাড়াও তিনি মরক্কোর জাতীয় দলের হয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। বাণিজ্যিক মূল্য:  আশরাফ হাকিমির বাণিজ্যিক মূল্য প্রায় ৭০ মিলিয়ন ইউরো। তার দ্রুত উন্নয়ন এবং শীর্ষ ক্লাবগুলোর সাথে যুক্ত থাকার কারণে তার বাণিজ্যিক মূল্য দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ৫. এর্লিং হালান্ড জন্মসাল: ২১ জুলাই, ২০০০  জনপ্রিয়তা:  এর্লিং হালান্ড নরওয়ের অন্যতম প্রতিভাবান তরুণ ফুটবলার। তার গোল করার দক্ষতা এবং অসাধারণ গতি তাকে আধুনিক যুগের সেরা স্ট্রাইকারদের একজন করে তুলেছে। আন্তর্জাতিক ফুটবলের ৫ জন উজ্জ্বল উদীয়মান তারকা ফুটবল বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা এবং প্রতিনিয়ত নতুন প্রতিভা উদয় হচ্ছে যারা ভবিষ্যতে এই খেলার নায়ক হিসেবে আবির্ভূত হবে। এখানে পাঁচজন আন্তর্জাতিক ফুটবলের উজ্জ্বল উদীয়মান তারকার পরিচয় দেওয়া হলো: 1. জামাল মুসাইয়ালা (জার্মানি/বায়ের্লিন) জামাল মুসাইয়ালা, বার্সেলোনায় খেলার তরুণ মিডফিল্ডার, তাঁর দুর্দান্ত কারিগরি দক্ষতা এবং খেলার বোঝাপড়ার জন্য পরিচিত। তার সৃজনশীলতা এবং দ্রুততার মাধ্যমে তিনি জার্মান জাতীয় দলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। 2. এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা (ফ্রান্স/রিয়াল মাদ্রিদ)  রিয়াল মাদ্রিদের মধ্যমায় প্রভূত প্রতিভা, কামাভিঙ্গা তাঁর আক্রমণাত্মক ও রক্ষামূলক দক্ষতার সমন্বয়ে খেলার ধারাকে পরিবর্তন করছেন। তাঁর বয়সের তুলনায় প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা তাকে ভবিষ্যতের জন্য এক অনমূল্য সম্পদ করে তুলেছে। 3. ফ্লোরিয়ান উইর্টজ (জার্মানি/বায়ের্ন মিউনিখ) বায়ের্ন মিউনিখের যুব প্রতিভা, উইর্টজ তাঁর সৃজনশীলতা এবং গোল করার ক্ষমতার জন্য পরিচিত। তিনি জার্মান জাতীয় দলে দ্রুত নিজেদের স্থান করে নিচ্ছেন এবং বড় মঞ্চে খেলার জন্য প্রস্তুত। 4. গাভি (স্পেন/বার্সেলোনা) স্পেনীয় মিডফিল্ডারের গাভি, বার্সেলোনার জন্য তাঁর অসাধারণ প্যাসিং এবং খেলার কৌশল প্রদর্শনের জন্য সুপরিচিত। তাঁর খেলার দৃষ্টি এবং নেতৃত্বের গুণাবলী তাঁকে দলের মূল শক্তি হিসেবে গড়ে তুলেছে। 5. জোভাননি রেইনা (আমেরিকা/বার্সেলোনা) আমেরিকান প্রতিভাধর, রেইনা তাঁর আক্রমণাত্মক দক্ষতা এবং গোল করার ক্ষমতার জন্য পরিচিত। বার্সেলোনার জন্য খেলতে শুরু করা রেইনা, ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বড় নাম হওয়ার সম্ভাবনা রাখে। এই পাঁচজন তরুণ ফুটবলার তাদের প্রতিভা এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ফুটবলের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করে তুলছে। তাঁদের কৃতিত্ব এবং উন্নতি পর্যবেক্ষণ করা ফুটবলপ্রেমীদের জন্য আনন্দের বিষয়।  

Read More
মুহাম্মদ বিন সালমান

মুহাম্মদ বিন সালমান MBS – সৌদি যুবরাজ

মুহাম্মদ বিন সালমান, সৌদি আরবের বর্তমান যুবরাজ এবং দেশটির সবচেয়ে প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের একজন, বিশ্বের অন্যতম আলোচিত নেতা হিসেবে বিবেচিত। তিনি তার উচ্চাভিলাষী চিন্তাভাবনা, আধুনিক শাসন ব্যবস্থা এবং ব্যক্তিগত জীবনধারার জন্য পরিচিত। মুহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বে সৌদি আরব বিভিন্ন সংস্কার এবং আধুনিকীকরণের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এই প্রবন্ধে তার পরিবার, শাসন ব্যবস্থার রূপান্তর, উচ্চাভিলাষী চিন্তাভাবনা এবং জীবনধারা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।    পিতা এবং মাতার নাম ও পরিবার : মুহাম্মদ বিন সালমান সৌদি আরবের বর্তমান রাজা, সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের পুত্র। তার পিতার শাসনামলে তিনি ক্রমাগত ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছেন এবং বর্তমানে সৌদি আরবের যুবরাজ হিসেবে কর্মরত। তার মায়ের নাম ফাহদা বিনতে ফালাহ আল হিতালাইন। ফাহদা বিনতে ফালাহ আল হিতালাইন সৌদি বেদুইন আদিবাসীর একটি বংশের অন্তর্ভুক্ত এবং তার নিজস্ব শিকড় রয়েছে এ অঞ্চলের ঐতিহ্যের সঙ্গে। মুহাম্মদ বিন সালমানের পরিবারে তার বেশ কয়েকজন ভাইবোন রয়েছে। তার পাঁচজন ভাই এবং তিনজন বোন রয়েছে। তবে মুহাম্মদ বিন সালমান সৌদি রাজ পরিবারের অভ্যন্তরে এবং বিশ্বের রাজনীতি ও অর্থনীতিতে সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবে উদ্ভাসিত হয়েছেন।  শৈশব এবং শিক্ষা : মুহাম্মদ বিন সালমানের শৈশব তার পিতার ঘনিষ্ঠ তত্ত্বাবধানে কেটেছে। তিনি শৈশব থেকে রাজনীতি, অর্থনীতি এবং সামরিক কৌশল শেখার সুযোগ পেয়েছিলেন। তার প্রাথমিক শিক্ষা সৌদি আরবেই সম্পন্ন হয়, যেখানে তিনি উচ্চতর মানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেছেন। তিনি রিয়াদের কিং সৌদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তার শিক্ষা এবং পারিবারিক পরিবেশ তাকে শৈশব থেকেই নেতৃত্বের গুণাবলী শিখিয়েছে। রাজপরিবারের উত্তরাধিকারী হিসেবে তার দায়িত্বের কথা ভেবেই তাকে ছোটবেলা থেকেই কঠোর নিয়ম-কানুন মেনে বড় হতে হয়েছে।  রাজনৈতিক উত্থান এবং শাসন ব্যবস্থা: মুহাম্মদ বিন সালমানের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু হয় খুব দ্রুত। ২০১৫ সালে, তার পিতা সালমান বিন আবদুলআজিজ আল সৌদ সৌদি আরবের রাজা হন। এর পরপরই মুহাম্মদ বিন সালমান গুরুত্বপূর্ণ পদে নিযুক্ত হন এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি দেশটির ডি ফ্যাক্টো শাসক হিসেবে পরিচিত হন। তিনি বর্তমানে সৌদি আরবের ডেপুটি প্রাইম মিনিস্টার, প্রতিরক্ষামন্ত্রী, এবং অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন বিষয়ক কাউন্সিলের প্রধান।  উচ্চাভিলাষী চিন্তাভাবনা : মুহাম্মদ বিন সালমানের উচ্চাভিলাষী চিন্তাভাবনার পরিচয় মেলে তার “ভিশন ২০৩০” পরিকল্পনা থেকে। এই পরিকল্পনা সৌদি আরবের অর্থনৈতিক ও সামাজিক আধুনিকীকরণের একটি পূর্ণাঙ্গ রূপান্তর। তার এই দৃষ্টিভঙ্গি মূলত দেশের তেলের উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে বহুমুখী অর্থনীতি তৈরি করা, সৌদি আরবের আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করা, এবং সৌদি সমাজের সংস্কার আনতে উদ্দীপ্ত।   ভিশন ২০৩০ এর প্রধান লক্ষ্যের মধ্যে রয়েছে:   অর্থনৈতিক বৈচিত্র্য: সৌদি আরবের অর্থনীতি দীর্ঘদিন ধরে তেলের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু মুহাম্মদ বিন সালমান এই নির্ভরতা কমিয়ে বহুমুখী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চান, যা দেশের দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে। এর মধ্যে রয়েছে পর্যটন, স্বাস্থ্যসেবা, প্রযুক্তি, এবং বিনোদন শিল্পের উন্নয়ন। নারীর অধিকার ও সামাজিক সংস্কার: মুহাম্মদ বিন সালমান নারী অধিকার এবং সামাজিক সংস্কারে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। তার শাসনামলে নারীরা গাড়ি চালানোর অনুমতি পেয়েছে, এবং তাদেরকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। নারীর কর্মসংস্থান, শিক্ষা এবং সামাজিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হওয়ার সুযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। পর্যটন এবং বিনোদন শিল্পের প্রসার: মুহাম্মদ বিন সালমান দেশের বিনোদন এবং পর্যটন খাতের প্রসার ঘটিয়েছেন। তিনি পর্যটনের জন্য সৌদি আরবকে একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে গড়ে তুলতে চাচ্ছেন, যেখানে বিদেশি বিনিয়োগ এবং পর্যটকদের আকর্ষণ করা হবে। ইতিমধ্যে সেখানকার ঐতিহ্যবাহী এবং আধুনিক স্থাপত্য এবং বিনোদনমূলক কার্যক্রমে বৈচিত্র্য আনা হয়েছে। শাসন ব্যবস্থা : মুহাম্মদ বিন সালমানের শাসন ব্যবস্থা তার কঠোর এবং উদ্ভাবনী নেতৃত্বের পরিচয় দেয়। তিনি দেশের নিরাপত্তা, অর্থনীতি, এবং সামাজিক সংস্কার নিয়ে কাজ করেছেন। তিনি আধুনিকীকরণ এবং উদারপন্থী পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও তার শাসনকাল কঠোরতার জন্যও পরিচিত।   রাজনৈতিক কঠোরতা:    যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান তার শাসনামলে রাজ পরিবারের ভেতরে এবং বাহিরে অনেক বিরোধিতা মোকাবেলা করেছেন। তবে তিনি তার ক্ষমতাকে প্রতিষ্ঠিত করতে এবং সংস্কারের জন্য বিরোধিতাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। কিছু বিশ্লেষক মনে করেন, তার কঠোর শাসন পদ্ধতি ক্ষমতা সংহত করার প্রচেষ্টার অংশ। বৈদেশিক নীতি:    মুহাম্মদ বিন সালমানের বৈদেশিক নীতি বিশেষত ইয়েমেন যুদ্ধ এবং ইরান-বিরোধী কার্যকলাপের জন্য সমালোচিত হয়েছে। ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সৌদি আরবের সামরিক অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে, যা বিশ্বব্যাপী সমালোচিত হয়। ইরানের সঙ্গে সৌদি আরবের উত্তেজনা বাড়তে থাকলেও তিনি এই সংঘাতকে প্রশমিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।   আধুনিকীকরণ এবং প্রগতিশীলতার মিশ্রণ:    মুহাম্মদ বিন সালমানের শাসন ব্যবস্থা আধুনিকীকরণের সঙ্গে রক্ষণশীল মূল্যবোধের মিশ্রণ তৈরি করে। তিনি ইসলামী শাসন ব্যবস্থা বজায় রেখে দেশকে আধুনিকায়নের পথে নিয়ে যেতে চান। তিনি এমন এক শাসন কাঠামো তৈরি করেছেন যেখানে দেশীয় আইন এবং আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সুযোগের মধ্যে সামঞ্জস্য বজায় রাখা যায়।  লাইফস্টাইল এবং ব্যক্তিগত জীবন মুহাম্মদ বিন সালমান একজন রাজকীয় জীবনযাপনে অভ্যস্ত। তার ব্যক্তিগত জীবনধারা খুবই বিলাসবহুল এবং তা সাধারণ মানুষের দৃষ্টিতে অত্যন্ত আকর্ষণীয়।    বিলাসবহুল জীবনযাত্রা :   সৌদি যুবরাজের ব্যক্তিগত জীবন অত্যন্ত গোপনীয় হলেও, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় তার বিলাসবহুল জীবনযাত্রার খবর প্রায়ই আসে। মুহাম্মদ বিন সালমান বিশ্বের সবচেয়ে দামী বাড়ি, নৌযান এবং অন্যান্য বিলাসবহুল সামগ্রী ক্রয় করেছেন বলে শোনা যায়। ২০১৫ সালে তিনি প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলারে একটি বিলাসবহুল ফরাসি প্রাসাদ কিনেছিলেন। এছাড়া তার একটি অত্যন্ত মূল্যবান ইয়ট রয়েছে, যার মূল্য প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ডলার।    পরিবারিক জীবন :   মুহাম্মদ বিন সালমান বিবাহিত এবং তার পরিবারের সদস্যরা মূলত রাজনৈতিক এবং সামাজিক কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত নয়। তিনি প্রায়ই তার স্ত্রী এবং সন্তানদের সাথে সময় কাটান। যুবরাজের পরিবারে চার সন্তান রয়েছে, এবং তিনি তাদেরকে ধর্মীয় এবং সামাজিক শিক্ষার মাধ্যমে বড় করতে চান।    বাণিজ্যিক মূল্য :   মুহাম্মদ বিন সালমান শুধু একজন রাজনৈতিক নেতা নন, বরং সৌদি আরবের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার অন্যতম নীতিনির্ধারক। তার বাণিজ্যিক মূল্য এবং সৌদি আরবের বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা বিশ্বব্যাপী পরিচিত।    আরামকো এবং সৌদি আরবের অর্থনীতি :   মুহাম্মদ বিন সালমানের অন্যতম বৃহৎ বাণিজ্যিক প্রকল্প হলো সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানি “আরামকো”। এই কোম্পানির শেয়ার বাজারে প্রবেশ করানো এবং দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকে আকর্ষণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ২০১৯ সালে, আরামকো তার প্রাথমিক পাবলিক অফারিং (আইপিও) চালু করেছিল, যা তাকে বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান কোম্পানিগুলোর মধ্যে একটি করে তোলে।  ব্যবসায়িক সম্পর্ক এবং বিনিয়োগ    

Read More